মেকআপের মধ্যে কনসিলার এমন একটা জিনিস, যা সঠিক ভাবে ব্যাবহার করতে না পারলে পুরো লুকটাই মাটি হয়ে যায়। অনেকেই হয়তো দামী কনসিলার কিনছেন, কিন্তু সেটা নিজের ফেইসে আ্যাপ্লাই করার পর মনে হয় একদমই যাচ্ছে না। শুধুমাত্র দাম দেখে কনসিলার কেনা মোটেই ঠিক না। নিজের স্কিনের রঙ, ধরন, আর ও অনেক বিষয় মাথায় রেখে তবেই সঠিক কনসিলার টি বেছে নেওয়া উচিত।
কনসিলারের শেড সিলেকশন-
কনসিলার পারফেক্টলি স্কিনটোনের সাথে ম্যাচ করা একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। হাতে নিয়ে একটা শেড মনে হচ্ছে পারফেক্ট, কিন্তু মুখে লাগালেই সেটা একদমই mismatch! এই ধরণের বিপত্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে নিজের ত্বকের আন্ডারটোন সম্পর্কে সঠিক ভাবে জানা। এবং সেই অনুযায়ী আন্ডারটোন এর সাথে ম্যাচ করে আপনার স্কিনের জন্য সঠিক কনসিলার টি বেছে নেওয়া।
স্কিনের ধরণ বুঝে কনসিলার বেছে নিন-
প্রথমেই যেটা আপনার জানা দরকার, সেটা হলো আপনার নিজের ত্বকের ধরন কেমন। অনেকেরই স্কিন খুব তেলতেলে হয়ে থাকে, আবার অনেকের ত্বক এতটাই ড্রাই যে কারন ছাড়াই চামড়া উঠতে থাকে। তাই নিজের স্কিন টাইপ টা কি সেটা আগে আপনাকে জানতে হবে। oily skin যাদের, তাদের জন্য ম্যাট ফিনিশিং আসে এমন কনসিলার ব্যবহার করা ভালো কারণ এটা অয়েল কন্ট্রোল করে আর লম্বা সময় ধরে স্কিনকে ফ্রেশ রাখে। আবার যাদের dry skin তাদের জন্য হাইড্রেটিং বা ডিউয়ি ফিনিশিং আসে এমন কনসিলার ঠিকঠাক কাজ করে। এ ধরণের কনসিলার স্কিনকে ড্রাই দেখানো থেকে বিরত থাকে এবং একটা ন্যাচারাল গ্লো দেয়।
আন্দারটোন বুঝে কনসিলারের শেড নির্বাচন করুন-
আন্ডারটোন শুনলেই মনে হয় এটি একটি জটিল বিষয় কিন্তু আসলে তা নয়। খুব সহজেই আপনি আপনার আন্ডারটোন কি তা জেনে নিতে পারবেন একটা টেস্টের মাধ্যমে। আপনি আপনার হাতের ভেইনের রঙ দেখে বুঝতে পারবেন আপনি কোন ক্যাটাগরিতে পড়ছেন। যদি আপনার ভেইন সবুজাভ বা ওলিভ ধরনের হয়, তাহলে আপনি ওয়ার্ম আন্ডারটোনে পড়েন। আবার যদি আপনার ভেইন নীলচে বা বেগুনি রঙের হয়, তাহলে আপনি কুল আন্ডারটোনের। আর যদি সবুজ নীলের মিক্স হয় তাহলে আপনি নিউট্রাল আন্ডারটোন। এই সবজ উপায়ে আন্ডারটোন বুঝে কনসিলারেরশেড সিলেক্ট করে নিলেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার স্কিনের জন্য পার্ফেক্ট কনসিলার শেডটি।
আরও একটি ছোট্ট টিপস, অনেক ক্ষেত্রে কনসিলারে নামের মধ্যেই আন্ডারটোনের ইঙ্গিত দেওয়া থাকে। নামগুলো একটু খেয়াল করলেই আপনি নিজের জন্য পারফেক্ট কনসিলার বেছে নিতে পারবেন।
পরিবেশ অনুযায়ী কনসিলার নির্বাচন করুন-
শুধুমাত্র কনসিলারের শেডই না, কনসিলারের টেক্সচার, কভারেজ এবং লং লাস্টিং পাওয়ার—এসবকিছু মিলিয়েই কনসিলার সিলেক্ট করতে হয়। অনেকে প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার আগে হালকা মেকআপ করেন, তাদের জন্য লাইট কভারেজ কনসিলার ব্যাবহার করা ভাল। আবার পার্টি, ওয়েডিং বা ফটোশ্যুটের জন্য দরকার ফুল কভারেজ কনসিলার যা স্কিনের ইমপার্ফেকশন ঢেকে ফেলে।
আবহাওয়ার সাথে সামঞ্জস্যতা-
অনেকেই একটা ভুল করে থাকেন। তা হলো একটা কনসিলার কিনেই সব ওয়েদারে ব্যবহার করতে থাকেন। কিন্তু আমরা জানি, আবহাওয়ার সাথে সাথে ত্বকের নেচারও বদলায়। গরমে স্কিন একটু ডার্ক হয়ে যায়, শীতে আবার ফেকাসে লাগে। তাই দুইটা কনসিলার মিক্স ম্যাচ করে ব্যবহার করলে সারা বছর কোনো সমস্যা হয় না। এক্ষেত্রে একটা ডার্ক এবং একটা লাইট কালার কনসিলার ব্যাবহার করতে পারেন।
সতর্কতা-
আর একটা ব্যাপার না বললেই নয়—অনেক সময় কিছু কনসিলার দেখতে ভালো, দামও বেশী কিন্তু স্কিনে সেট হয় না। ফেটে যায় বা স্কিনে ইরিটেশন হয়ে থাকে। তাই নতুন কনসিলার কেনার আগে ছোট টেস্টার দিয়ে দু একবার টেস্ট করে দেখে নেওয়া ভালো সেটা স্কিনে কোন সমস্যা করছে কিনা।
সবশেষে বলতে চাই- কনসিলার মানেই স্কিনের সব আনইভেন স্পট ঢেকে ফেলা না, বরং ফেসকে হাইলাইট করা। সঠিক কনসিলার সিলেকশন আপনার ত্বকের ধরন, রঙ, আবহাওয়া ও প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে। উপরের দিকনির্দেশনাগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার জন্য উপযুক্ত কনসিলার বেছে নিতে পারবেন। এটি আপনার মেকআপ আর্টকে আরও নিঁখুত করে তুলবে।




